গোপালগঞ্জে মানব পাচার ‌ চক্রের ১ সদস্য খুলনা থেকে গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর এলাকায় চাঞ্চল্যকর মানব পাচার মামলার এজাহার নামীয় আসামী মানবপাচার চক্রের ১ জন সদস্যকে খুলনা সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এ ব্যাপারে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারী আনুমানিক ২:৫৫ মিনিটে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্প এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-৬ এর সহযোগীতায় কেএমপি, খুলনার খুলনা সদর থানা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার মামলা নং- ১১, তারিখ- ১০/০২/২০২৫খ্রিঃ ধারা- ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ দমন ও আইনের ৭/৮(১)/৮(২)/১০(১); মামলার পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম সাবিনা বেগম (৩৫), স্বামী- শহিদ শেখ, সাং- মোল্লাদী, থানা- মুকসুদপুর, জেলা- গোপালগঞ্জ বলে জানা যায়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী সাবিনা বেগম একজন আদম ব্যবসায়ী। তার সাথে ভিকটিম সত্তার খন্দকার (৪০) এর পারিবারিক ভাবে সু-সম্পর্ক থাকায় ভিকটিমকে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখালে ভিকটিম সর্বমোট ১৬,০০,০০০ টাকায় তাদের মাধ্যমে ইতালিতে যেতে রাজি হয়। সে সরল বিশ্বাসে আসামীর কথামত টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আসামী সাবিনা বেগম ও তার সঙ্গীয় অপরাপর আসামীগণের সহায়তায় গত ১৭/১১/২০২৩ তারিখে ভিকটিমকে একটি ফ্লাইট যোগে দুবাইতে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে অপথে মিশর নিয়ে যায়।

ভিকটিম মিশর নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কথা বললে আসামীরা পরবর্তী ফ্লাইটে ইতালি নিয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করে। কিন্তু আসামীরা ইতালি না নিয়ে ভিকটিমকে লিবিয়াতে নিয়ে গিয়ে ভিকটিমকে জিম্মি করে এবং ভিকটিমের পরিবারের নিকটি মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ হিসেবে ভিকটিমের পরিবার ২৬,০০,০০০/- টাকা দেওয়ার পরেও আসামীগণ আরো টাকা দাবি করে। ভিকটিমের পরিবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ভিকটিম ২২/০১/২০২৫ তারিখে তার স্ত্রী লাবনী খন্দকার (৩২)’কে ইমোতে একটি গেমের কথা বলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। আসামীগণ ভিকটিমকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়। ৩০/০১/২০২৫ তারিখে লিবিয়ার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে লাবনী খন্দকার (৩২) তার স্বামী (ভিকটিম) এর মৃত দেহের ছবি দেখে মৃত দেহ শনাক্ত করেন। যাতে ভিকটিমকে আসামীগণ পরিকল্পিত ভাবে জিম্মি করে দালালচক্র হত্যা করে লিবিয়ার বেগড়া উপকূলে বালুর মধ্যে চাপা দিয়ে রাখে এবং লিবিয়া প্রশাসন ভিকটিম সত্তার খন্দকার এর লাশ বালুর মধ্য হতে উদ্ধার করে লিবিয়ার আল-আকিলা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *