গরুর রাখালকে পেটালেন বিএনপি নেতা দাউদ মেম্বার

জেলা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গরুর রাখালকে বেধড়ক মারধোরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ নেতার নাম দাউদ মেম্বার। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পাটিকাবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আরিফ নামের এক গরু ব্যবসায়ীর পাওনা টাকা আদায় করাকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় একই পরিবারের ৩ জন গুরুতর আহত হন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৮টার সময় পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবিরাভিটা গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত ৩ জন হলেন- ডাবিরাভিটা গ্রামের আফাজ উদ্দিন, আফাজ উদ্দিনের ছেলে রাখাল আবেশ আলী ও আবেশ আলীর স্ত্রী মহেলা খাতুন। ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দাউদ মেম্বার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসন করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই তার ছায়াতলে থেকে এলাকায় নানা ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পরবর্তী পর্বে।

ঘটনার বরাত দিয়ে জানা যায়, আরিফ নামের এক গরু ব্যবসায়ীর থেকে গরু ক্রয় করেন মাজিলা এলাকার রশিদ নামের এক ব্যক্তি। সেই গরু আরিফের কাছ থেকে নিয়ে আসেন রশিদের রাখাল আবেশ আলী। আবেশ আলী ৫শ টাকা দিন হাজিরায় রশিদের গরু দেখভালের কাজ করেন। গরু বিক্রির পর সম্পুর্ন টাকা পরিশোধ না করেই ৮৫ হাজার টাকা বাকি রেখে গরু নিয়ে আসেন রশিদ। আর্থিক সমস্যার কারণে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আরিফের পক্ষ নিয়ে আবেশের উপর টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকে বিএনপি নেতা দাউদ মেম্বার। বেশ কয়েকবার আবেশকে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিলে আবেশ বলেন- আমি সামান্য রাখাল। এতো টাকা আমি কিভাবে দেবো। টাকা দেবে রশিদ ভাই। এরপর রশিদ টাকা পরিশোধের জন্য ১ মাস সময় চান। গত ৫ ফেব্রুয়ারি মাস পার হলেই ৭ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৮টার সময় আবেশের উপর হামলা চালানো হয়। সেসময় আবেশ তার বাড়ির পাশের চায়ের দোকানে বসে ছিল। আকস্মিকভাবে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই দাউদ মেম্বার দলবদ্ধভাবে এসে আবেশের উপর হামলা চালায়। তাকে বেধড়ক মারপিট করে হামলাকারীরা। হামলার সময় দাউদ মেম্বারের সাথে হালসা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ আলী, আজাদ, সাইফুল, মালেকসহ আনুমানিক ৪০ জন ছিল। তারা সবাই মিলে আবেশকে বেধড়ক মারপিট করে। আবেশকে বাঁচাতে তার বাবা ও স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধোর করে হামলাকারীরা। আবেশের স্ত্রী মার খেয়ে রাস্তায় পরে গেলে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায়।

ভুক্তভোগী রাখাল আবেশ আলী প্রতিবেদককে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের অতো ক্ষমতা নেই। দাউদ মেম্বার ক্ষমতাধর মানুষ। আমাকে মারার পর তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে যায়। যার কারণে তাদের ভয়ে আমরা মামলা করতে পারছি না। মামলা করলে তারা আমাদের পরিবারসহ হত্যা করতে পারে।
প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি দাউদ মেম্বারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে, প্রথমে তিনি মারধোরের কথাটি স্বীকার না করলেও কথোপকথনের একপর্যায়ে মারধোরের বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, যাদেরকে আ.লীগের নেতা আখ্যা দেওয়া হয়েছে তারা কেউই আওয়ামীলীগের কোন পদে ছিলোনা। তবে তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।