বিশেষ প্রতিনিধি: ছাত্র আন্দোলনের পর হাসিনা সরকারের পতন ঘটায় বাজারে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট কার্যত নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। কৃষকরা এখন জমিতেই তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। বাজারগুলোতে ধাপে ধাপে দালাল চক্রের প্রভাবও কমেছে, ফলে সবজির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে ছাত্ররা তদারকি শুরু করায় এর সুফলও দেখা যাচ্ছে। ভোক্তারা এখন কম দামে পণ্য কিনতে পারছেন। গতকাল বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার কৃষক, সবজিহাট ও পাইকারি মোকামে গিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।
উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ সবজিহাট মহাস্থানে কৃষকরা সরাসরি নির্ধারিত দামে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন। আগে সিন্ডিকেটের চাপের কারণে তাদের কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করা হতো। গতকাল সেই চিত্র দেখা যায়নি।
পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় এখন উত্তরাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহ বেড়েছে। ফলে আন্দোলনের সময় যেসব সবজির দাম বেড়েছিল, তা এখন কমতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিন্ডিকেট ভেঙে যাওয়ায় দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে।
মহাস্থান হাটে পটোল, ঢ্যাঁড়শ, পেঁপে, কাঁচামরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। আলুর দামও কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, তারা এখন উৎপাদিত পণ্য সরাসরি জমিতে বিক্রি করতে পারছেন এবং এতে তাদের লাভ হচ্ছে। বাজারের সবজি বিক্রেতারাও জানান, এখন পণ্য ঠিকমতো আসছে এবং খুচরা বিক্রিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কম দামে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে।
মুরগির দামও কমেছে, ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে কমে ১৬৫-১৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬০০ থেকে কমে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ীরা জানান, গত দু’দিনে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে এবং মজুতও স্বাভাবিক রয়েছে। মাছ বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ কম হলেও মাছের দাম বাড়েনি।
ছাত্রদের বাজার তদারকি এবং জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রমের ফলে বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে, যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সহায়ক হয়েছে। বগুড়া ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, পরিবহন-সংশ্লিষ্ট খরচ কমে আসায় পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নেমে আসছে। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন।